চুল আমাদের সৌন্দর্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুস্থ, মসৃণ ও ঝলমলে চুল আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং আকর্ষণীয় দেখায়। কিন্তু দূষণ, স্ট্রেস, ভুল খাদ্যাভ্যাস ও রসায়নিক পণ্য ব্যবহারের কারণে চুল অনেক সময় দুর্বল, রুক্ষ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই চুলের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাজারে অনেক ধরনের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও ট্রিটমেন্ট পাওয়া গেলেও ঘরোয়া, প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর। আজ আমরা এমন কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনাকে সুস্থ ও সুন্দর চুল পেতে সাহায্য করবে।
ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্নের কিছু কার্যকর টিপস
নারিকেল তেল ম্যাসাজ
নারিকেল তেলে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমায়। সপ্তাহে ২-৩ বার গরম নারিকেল তেল দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার
অ্যালোভেরা ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং স্ক্যাল্পে সজীবতা আনে। অ্যালোভেরা জেল সরাসরি মাথায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের প্যাক
ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। ১টি ডিম ফেটিয়ে মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
দই ও মধুর মাস্ক
দই ও মধু মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে চুলে লাগালে চুল নরম ও মসৃণ হয়।
চুলের যত্নে কোন ঘরোয়া উপায় কাজ করে
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং চুল পড়া, রুক্ষতা, খুশকি ইত্যাদি সমস্যা কমাতে অনেক প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যা প্রমাণিতভাবে কাজ করে। নিচে সবচেয়ে কার্যকর কয়েকটি ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো:
নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ
নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে12।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার
অ্যালোভেরা জেলে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন ও খনিজ চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে মৃত ত্বক দূর হয় এবং চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে আসে345।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রসে থাকা সালফার চুলের কেরাটিন উৎপাদন বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেললে চুলের ঘনত্ব বাড়ে এবং সংক্রমণ রোধ হয়34।
মেথি বীজের প্যাক
মেথি বীজে থাকা ভিটামিন এবং স্টেরয়েড স্যাপোনিন চুল পড়া কমায় এবং চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে। মেথি বীজ ভিজিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়34।
ডিমের প্রোটিন মাস্ক
ডিমে প্রচুর প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে যা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে। ডিমের মাস্ক সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করলে চুলের ভঙ্গুরতা কমে এবং চুল উজ্জ্বল হয়45।
দই ও মধুর হেয়ার প্যাক
টক দই ও মধুর মিশ্রণ চুলকে মোলায়েম ও ঝলমলে করে এবং শুষ্কতা দূর করে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে5।
অলিভ অয়েল ম্যাসাজ
অলিভ অয়েল মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং খুশকি কমায়। গরম অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করলে চুলের শুষ্কতা দূর হয়4।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল হবে সুস্থ, ঘন ও ঝলমলে। তবে চুলের সমস্যা গুরুতর হলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত346।
চুলের যত্নে নারকেল তেলের সুবিধা কী
নারকেল তেল চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
চুলের পুষ্টি ও আর্দ্রতা বজায় রাখা
নারকেল তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো চুলের শ্যাফটে গভীরভাবে প্রবেশ করে চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি ও ময়শ্চারাইজেশন দেয়, ফলে চুল থাকে নরম, মসৃণ ও ঝলমলে24।
চুলের প্রোটিন ক্ষতি কমানো
নারকেল তেল চুলের প্রোটিন লস কমাতে সাহায্য করে, যা চুলের ভঙ্গুরতা ও ভাঙন রোধ করে এবং চুলকে শক্তিশালী করে25।
চুল পড়া কমানো ও চুলের গোড়া মজবুত করা
নিয়মিত নারকেল তেল ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়ার সমস্যা কমে145।
চুলে উজ্জ্বলতা ও দীপ্তি বৃদ্ধি
নারকেল তেল চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে এবং চুলকে সুস্থ দেখায়15।
স্ক্যাল্পের সমস্যা প্রতিরোধ
নারকেল তেলে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে, খুশকি ও ফ্রিজি চুলের সমস্যা কমায়35।
চুলের বৃদ্ধি উৎসাহিত করা
নারকেল তেল ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে27।
চুলকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করা
নারকেল তেল চুলকে পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং শুষ্কতা কমায়5।
এই কারণে নারকেল তেল চুলের যত্নে একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে মজবুত, ঝলমলে ও সুস্থ125।
নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে কীভাবে সাহায্য করে
নারকেল তেলে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, বিশেষ করে লরিক অ্যাসিড, চুলের শ্যাফটে (কাটিকল) গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে। এই ফ্যাট ও প্রোটিন চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি দেয় এবং চুলের প্রোটিনের সাথে দৃঢ় বন্ধন তৈরি করে, যা চুলকে মজবুত ও স্বাস্থ্যকর রাখে1। নারকেল তেল চুলের গোড়া থেকে শুরু করে গোড়ার চারপাশের ত্বক পর্যন্ত পুষ্টি পৌঁছে দেয়, ফলে চুলের ফলিকল সঠিকভাবে কাজ করে এবং চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়24।
এছাড়া, নারকেল তেলে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে, যা চুল পড়া ও খুশকি কমাতে সাহায্য করে1। নারকেল তেল ব্যবহারে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা চুলের ফলিকলকে বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে24।
অন্যদিকে, নারকেল তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোর কম আণবিক ওজন থাকায় তা চুলের খাদকে সহজে প্রবেশ করে, চুলের প্রোটিন ক্ষতি কমায় এবং চুলকে মজবুত ও স্থিতিস্থাপক করে5। ফলে চুল ভাঙা ও ক্ষতি কমে, চুলের গঠন উন্নত হয় এবং চুল ঝলমলে ও স্বাস্থ্যকর হয়।
সংক্ষেপে, নারকেল তেল:
চুলের শ্যাফটে গভীরভাবে প্রবেশ করে পুষ্টি ও আর্দ্রতা দেয়
চুলের প্রোটিনের ক্ষতি কমিয়ে চুলকে মজবুত করে
মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে এবং খুশকি কমায়
রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের ফলিকলকে পুষ্টি সরবরাহ করে
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখে1245
এই কারণে নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে একটি অত্যন্ত কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান।
উপসংহার
নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে এবং চুলকে সুস্থ, মজবুত ও ঝলমলে রাখতে অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর গভীর পুষ্টি ও আর্দ্রতা প্রদান ক্ষমতা চুলের ভেতর থেকে শক্তি যোগায়, চুল পড়া ও ভাঙা কমায়, পাশাপাশি মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে খুশকি দূর করে। নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে আসে। তাই ঘরোয়া ও নিরাপদ এই পদ্ধতিটি চুলের যত্নে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা দীর্ঘমেয়াদে চুলকে স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত রাখবে।
চুলের যত্নের জন্য ঘরোয়া উপায়: প্রাকৃতিক ও সহজ পদ্ধতি
April 22, 2025
Health
No Comments
Author
চুল আমাদের সৌন্দর্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুস্থ, মসৃণ ও ঝলমলে চুল আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং আকর্ষণীয় দেখায়। কিন্তু দূষণ, স্ট্রেস, ভুল খাদ্যাভ্যাস ও রসায়নিক পণ্য ব্যবহারের কারণে চুল অনেক সময় দুর্বল, রুক্ষ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই চুলের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাজারে অনেক ধরনের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও ট্রিটমেন্ট পাওয়া গেলেও ঘরোয়া, প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর। আজ আমরা এমন কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনাকে সুস্থ ও সুন্দর চুল পেতে সাহায্য করবে।
ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্নের কিছু কার্যকর টিপস
নারিকেল তেল ম্যাসাজ
নারিকেল তেলে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমায়। সপ্তাহে ২-৩ বার গরম নারিকেল তেল দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার
অ্যালোভেরা ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং স্ক্যাল্পে সজীবতা আনে। অ্যালোভেরা জেল সরাসরি মাথায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের প্যাক
ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। ১টি ডিম ফেটিয়ে মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
মেথি বীজের পেস্ট
মেথি বীজ ভিজিয়ে পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগালে চুলের ঘনত্ব বাড়ে এবং ড্যান্ড্রাফ কমে।
দই ও মধুর মাস্ক
দই ও মধু মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে চুলে লাগালে চুল নরম ও মসৃণ হয়।
চুলের যত্নে কোন ঘরোয়া উপায় কাজ করে
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং চুল পড়া, রুক্ষতা, খুশকি ইত্যাদি সমস্যা কমাতে অনেক প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যা প্রমাণিতভাবে কাজ করে। নিচে সবচেয়ে কার্যকর কয়েকটি ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো:
নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ
নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে12।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার
অ্যালোভেরা জেলে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন ও খনিজ চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে মৃত ত্বক দূর হয় এবং চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে আসে345।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রসে থাকা সালফার চুলের কেরাটিন উৎপাদন বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেললে চুলের ঘনত্ব বাড়ে এবং সংক্রমণ রোধ হয়34।
মেথি বীজের প্যাক
মেথি বীজে থাকা ভিটামিন এবং স্টেরয়েড স্যাপোনিন চুল পড়া কমায় এবং চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে। মেথি বীজ ভিজিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়34।
ডিমের প্রোটিন মাস্ক
ডিমে প্রচুর প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে যা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে। ডিমের মাস্ক সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করলে চুলের ভঙ্গুরতা কমে এবং চুল উজ্জ্বল হয়45।
দই ও মধুর হেয়ার প্যাক
টক দই ও মধুর মিশ্রণ চুলকে মোলায়েম ও ঝলমলে করে এবং শুষ্কতা দূর করে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে5।
অলিভ অয়েল ম্যাসাজ
অলিভ অয়েল মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং খুশকি কমায়। গরম অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করলে চুলের শুষ্কতা দূর হয়4।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল হবে সুস্থ, ঘন ও ঝলমলে। তবে চুলের সমস্যা গুরুতর হলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত346।
চুলের যত্নে নারকেল তেলের সুবিধা কী
নারকেল তেল চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
চুলের পুষ্টি ও আর্দ্রতা বজায় রাখা
নারকেল তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো চুলের শ্যাফটে গভীরভাবে প্রবেশ করে চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি ও ময়শ্চারাইজেশন দেয়, ফলে চুল থাকে নরম, মসৃণ ও ঝলমলে24।
চুলের প্রোটিন ক্ষতি কমানো
নারকেল তেল চুলের প্রোটিন লস কমাতে সাহায্য করে, যা চুলের ভঙ্গুরতা ও ভাঙন রোধ করে এবং চুলকে শক্তিশালী করে25।
চুল পড়া কমানো ও চুলের গোড়া মজবুত করা
নিয়মিত নারকেল তেল ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়ার সমস্যা কমে145।
চুলে উজ্জ্বলতা ও দীপ্তি বৃদ্ধি
নারকেল তেল চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে এবং চুলকে সুস্থ দেখায়15।
স্ক্যাল্পের সমস্যা প্রতিরোধ
নারকেল তেলে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে, খুশকি ও ফ্রিজি চুলের সমস্যা কমায়35।
চুলের বৃদ্ধি উৎসাহিত করা
নারকেল তেল ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে27।
চুলকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করা
নারকেল তেল চুলকে পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং শুষ্কতা কমায়5।
এই কারণে নারকেল তেল চুলের যত্নে একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে মজবুত, ঝলমলে ও সুস্থ125।
নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে কীভাবে সাহায্য করে
নারকেল তেলে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, বিশেষ করে লরিক অ্যাসিড, চুলের শ্যাফটে (কাটিকল) গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে। এই ফ্যাট ও প্রোটিন চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি দেয় এবং চুলের প্রোটিনের সাথে দৃঢ় বন্ধন তৈরি করে, যা চুলকে মজবুত ও স্বাস্থ্যকর রাখে1। নারকেল তেল চুলের গোড়া থেকে শুরু করে গোড়ার চারপাশের ত্বক পর্যন্ত পুষ্টি পৌঁছে দেয়, ফলে চুলের ফলিকল সঠিকভাবে কাজ করে এবং চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়24।
এছাড়া, নারকেল তেলে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে, যা চুল পড়া ও খুশকি কমাতে সাহায্য করে1। নারকেল তেল ব্যবহারে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা চুলের ফলিকলকে বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে24।
অন্যদিকে, নারকেল তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোর কম আণবিক ওজন থাকায় তা চুলের খাদকে সহজে প্রবেশ করে, চুলের প্রোটিন ক্ষতি কমায় এবং চুলকে মজবুত ও স্থিতিস্থাপক করে5। ফলে চুল ভাঙা ও ক্ষতি কমে, চুলের গঠন উন্নত হয় এবং চুল ঝলমলে ও স্বাস্থ্যকর হয়।
সংক্ষেপে, নারকেল তেল:
চুলের শ্যাফটে গভীরভাবে প্রবেশ করে পুষ্টি ও আর্দ্রতা দেয়
চুলের প্রোটিনের ক্ষতি কমিয়ে চুলকে মজবুত করে
মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে এবং খুশকি কমায়
রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের ফলিকলকে পুষ্টি সরবরাহ করে
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখে1245
এই কারণে নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে একটি অত্যন্ত কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান।
উপসংহার
নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জোগাতে এবং চুলকে সুস্থ, মজবুত ও ঝলমলে রাখতে অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর গভীর পুষ্টি ও আর্দ্রতা প্রদান ক্ষমতা চুলের ভেতর থেকে শক্তি যোগায়, চুল পড়া ও ভাঙা কমায়, পাশাপাশি মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে খুশকি দূর করে। নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে আসে। তাই ঘরোয়া ও নিরাপদ এই পদ্ধতিটি চুলের যত্নে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা দীর্ঘমেয়াদে চুলকে স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত রাখবে।
চুলের যত্ন ঘরোয়া উপায়