রিলেশনশিপ বা সম্পর্ক মানুষের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। তবে সম্পর্ক সব সময় মসৃণ ও সুখকর হয় না; মাঝে মাঝে নানা জটিলতা ও সমস্যা সৃষ্টি হয় যা সম্পর্ককে দুর্বল বা টিকতে না দেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সম্পর্কের জটিলতা বলতে বোঝায় সেই অবস্থা যেখানে সম্পর্কের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও আন্তরিকতা হারিয়ে যায় এবং একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া ও যোগাযোগের অভাব দেখা দেয়3। এই জটিলতার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে যেমন- বিশ্বাসের অভাব, মিথ্যে কথা বলা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, অতিরিক্ত প্রত্যাশা, দায়িত্বের অবহেলা, এবং যোগাযোগের ঘাটতি1268।
রিলেশনশিপের জটিলতার প্রধান কারণসমূহ
বিশ্বাস ও সততার অভাব: মিথ্যে কথা ও বিশ্বাস ভঙ্গ সম্পর্কের মুল ভিত্তি নষ্ট করে দেয়, যা সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে17।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ঈর্ষা: সঙ্গীর সাফল্যে ঈর্ষা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হলে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়1।
অতিরিক্ত প্রত্যাশা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব ও বাস্তবতার মধ্যে ফারাকের কারণে প্রত্যাশা বেড়ে যাওয়া হতাশার কারণ হয়2।
যোগাযোগের অভাব: কথা না বলার ফলে ভুল বোঝাবুঝি ও তিক্ততা বাড়ে, যা সম্পর্ককে জটিল করে8।
নৈতিকতার অবক্ষয় ও দায়িত্বের অবহেলা: পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে অবহেলা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়2।
সম্পর্কের জটিলতা কমানোর উপায়
সততা ও বিশ্বাস বজায় রাখা: একে অপরের প্রতি সৎ থাকা ও বিশ্বাস গড়ে তোলা সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি17।
ধৈর্য ধারণ ও মানিয়ে নেওয়া: সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ধৈর্য খুবই জরুরি; একে অপরের ভুল মেনে নেওয়া ও মানিয়ে চলা প্রয়োজন2।
খোলাখুলি যোগাযোগ: সমস্যা বা অভিযোগ সরাসরি আলোচনা করে সমাধান করা উচিত, যাতে ভুল বোঝাবুঝি কমে8।
সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষা: নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন ও নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় রোধ করা সম্পর্ককে সুস্থ রাখে2।
উপযুক্ত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা: সামাজিক অবস্থান ও মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি মিল রেখে সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত2।
অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাশা কমানো: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা ও সম্পর্কের প্রতি যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গি রাখা জরুরি2।
সম্পর্কের জটিলতা মোকাবিলায় এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে সম্পর্কের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব হয় এবং সম্পর্ককে সুস্থ ও সুখী রাখা যায়। সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করাই মূল চাবিকাঠি, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনে2।
রিলেশনশিপের জটিলতা কীভাবে সৃষ্টি হয়
রিলেশনশিপ বা সম্পর্কের জটিলতা সাধারণত বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও যোগাযোগজনিত কারণে সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক মানেই বিশ্বাস, ভরসা ও স্বস্তির জায়গা হওয়া উচিত, কিন্তু যখন এই তিনটি উপাদানের কোনো একটি বা একাধিক উপাদান সম্পর্ক থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সম্পর্ক জটিল হয়ে ওঠে1।
রিলেশনশিপের জটিলতা সৃষ্টির প্রধান কারণসমূহ
যোগাযোগের অভাব: সম্পর্কের মধ্যে স্বচ্ছ ও খোলাখুলি যোগাযোগ না থাকলে ভুল বোঝাবুঝি, দূরত্ব ও বিরক্তি সৃষ্টি হয়। আবেগ প্রকাশের অভাব সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে এবং একে অপরের প্রতি বিরক্তি বাড়ায়2।
বিশ্বাস ও সততার অভাব: মিথ্যে বলা, গোপনীয়তা রাখা বা প্রতারণা সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি নষ্ট করে, যা সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরায়1।
অতীতের ঝগড়া ও অভিযোগ টেনে আনা: পুরনো মনোমালিন্য বা অভিযোগ বারবার তুলে আনা সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা ও দূরত্ব বাড়ায়, যা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়5।
অপর্যাপ্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান: সঙ্গীর প্রতি অসম্মান, ক্রমাগত সমালোচনা বা অবজ্ঞা সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ও আস্থা নষ্ট করে23।
অমীমাংসিত মানসিক ট্রমা: অতীতের মানসিক আঘাত বা ট্রমা সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ও সংযুক্তিতে বাধা দেয়, যা সম্পর্কের ভাঙনের কারণ হতে পারে2।
অপূর্ণ যৌন চাহিদা: যৌন সম্পর্কের অসন্তুষ্টি মানসিক ও শারীরিক দূরত্ব সৃষ্টি করে, যা দাম্পত্য জীবনে সমস্যা বাড়ায়2।
টক্সিক আচরণ: যেমন একপক্ষের ডমিনেটিং বা নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ, যা অন্য পক্ষের জন্য মানসিক চাপ ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে17।
অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাশা ও তুলনা: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার অভাব ও অন্যের সাথে অযৌক্তিক তুলনা সম্পর্কের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে3।
নিয়মিত একই সমস্যা পুনরাবৃত্তি: সমস্যা সঠিকভাবে সমাধান না হলে বারবার একই বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়, যা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়5।
সারসংক্ষেপ
রিলেশনশিপের জটিলতা মূলত যোগাযোগের ঘাটতি, বিশ্বাসের অভাব, অতীতের অভিযোগ, সম্মানের অভাব, মানসিক ট্রমা, যৌন অসন্তুষ্টি এবং টক্সিক আচরণের কারণে সৃষ্টি হয়। এসব কারণ সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব, বিরক্তি ও তিক্ততা বাড়িয়ে সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে1235। তাই সম্পর্ককে সুস্থ ও মজবুত রাখতে খোলাখুলি কথা বলা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা রাখা, বিশ্বাস গড়ে তোলা এবং অতীতের সমস্যাগুলো মীমাংসা করা অত্যন্ত জরুরি।
সম্পর্কের জটিলতা কীভাবে সমাধান করা যায়
রিলেশনশিপের জটিলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য মূলত তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: খোলামেলা আলোচনা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বিশ্বাস গড়ে তোলা। প্রথমত, মনে মনে কিছু পুষে না রেখে সরাসরি সঙ্গীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। মন খারাপ থাকলেও, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত যেকোনো সমস্যা নিয়ে দু’জনে খোলাখুলি কথা বলুন, তবে ঝগড়ার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনা বজায় রাখার চেষ্টা করুন3।
দ্বিতীয়ত, একে অপরকে বুঝতে চেষ্টা করা জরুরি। যখন সঙ্গী রাগ করে বা বিরক্ত হয়, তখন তার অনুভূতি ও কারণ বোঝার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে সম্পর্কের মঙ্গলার্থে মানিয়ে চলুন3। এছাড়া, সম্পর্কের বাইরে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে সমাধান চাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে সম্পর্ক দুর্বল হতে পারে3।
তৃতীয়ত, মানসিক দূরত্ব কমাতে ধৈর্য, আন্তরিকতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্কের ভিত মজবুত করতে হবে। খোলামেলা ও সৎ যোগাযোগ বজায় রাখা, একসঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানো, ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ক্ষমা করা এবং সঙ্গীর প্রতি সমানুভূতিশীল হওয়াও অত্যন্ত জরুরি4। এছাড়া মাঝে মাঝে সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস প্রকাশ করা, একসঙ্গে ঘুরতে বের হওয়া এবং প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সিলিং নেওয়াও সম্পর্কের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে4।
আরো কিছু কার্যকর উপায় হলো:
উত্তেজনায় রেগে না যেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজা5
এইসব উপায় মেনে চললে সম্পর্কের জটিলতা অনেকাংশে কমে আসে এবং সম্পর্কের ভিত মজবুত হয়। তাই সম্পর্কের সমস্যা এড়াতে ও সমাধান করতে খোলামেলা আলোচনা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া বজায় রাখা সবচেয়ে কার্যকরী পথ2345।
উপসংহার
রিলেশনশিপের জটিলতা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি সম্পর্কেই কখনো না কখনো দেখা দিতে পারে। তবে এসব জটিলতা সম্পর্কের অবনতি নয়, বরং সম্পর্ককে আরও মজবুত করার সুযোগ হিসেবেও দেখা যেতে পারে যদি সঠিক মনোভাব ও উপায় অবলম্বন করা হয়। খোলাখুলি যোগাযোগ, পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা সমাধান সম্ভব। ধৈর্য, সহানুভূতি এবং বোঝাপড়া দিয়ে সম্পর্কের ভিত গড়ে তোলা গেলে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ও সুখকর হয়। তাই সম্পর্কের জটিলতাকে বাধা না ভেবে, তা কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে আমরা আরও গভীর ও অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।
রিলেশনশিপের জটিলতা ও সমাধানের উপায়
April 28, 2025
Health
No Comments
Author
রিলেশনশিপ বা সম্পর্ক মানুষের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। তবে সম্পর্ক সব সময় মসৃণ ও সুখকর হয় না; মাঝে মাঝে নানা জটিলতা ও সমস্যা সৃষ্টি হয় যা সম্পর্ককে দুর্বল বা টিকতে না দেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সম্পর্কের জটিলতা বলতে বোঝায় সেই অবস্থা যেখানে সম্পর্কের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও আন্তরিকতা হারিয়ে যায় এবং একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া ও যোগাযোগের অভাব দেখা দেয়3। এই জটিলতার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে যেমন- বিশ্বাসের অভাব, মিথ্যে কথা বলা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, অতিরিক্ত প্রত্যাশা, দায়িত্বের অবহেলা, এবং যোগাযোগের ঘাটতি1268।
রিলেশনশিপের জটিলতার প্রধান কারণসমূহ
বিশ্বাস ও সততার অভাব: মিথ্যে কথা ও বিশ্বাস ভঙ্গ সম্পর্কের মুল ভিত্তি নষ্ট করে দেয়, যা সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে17।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ঈর্ষা: সঙ্গীর সাফল্যে ঈর্ষা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হলে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়1।
অতিরিক্ত প্রত্যাশা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব ও বাস্তবতার মধ্যে ফারাকের কারণে প্রত্যাশা বেড়ে যাওয়া হতাশার কারণ হয়2।
যোগাযোগের অভাব: কথা না বলার ফলে ভুল বোঝাবুঝি ও তিক্ততা বাড়ে, যা সম্পর্ককে জটিল করে8।
নৈতিকতার অবক্ষয় ও দায়িত্বের অবহেলা: পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে অবহেলা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়2।
সম্পর্কের জটিলতা কমানোর উপায়
সততা ও বিশ্বাস বজায় রাখা: একে অপরের প্রতি সৎ থাকা ও বিশ্বাস গড়ে তোলা সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি17।
ধৈর্য ধারণ ও মানিয়ে নেওয়া: সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ধৈর্য খুবই জরুরি; একে অপরের ভুল মেনে নেওয়া ও মানিয়ে চলা প্রয়োজন2।
খোলাখুলি যোগাযোগ: সমস্যা বা অভিযোগ সরাসরি আলোচনা করে সমাধান করা উচিত, যাতে ভুল বোঝাবুঝি কমে8।
সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষা: নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন ও নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় রোধ করা সম্পর্ককে সুস্থ রাখে2।
উপযুক্ত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা: সামাজিক অবস্থান ও মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি মিল রেখে সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত2।
অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাশা কমানো: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা ও সম্পর্কের প্রতি যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গি রাখা জরুরি2।
সম্পর্কের জটিলতা মোকাবিলায় এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে সম্পর্কের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব হয় এবং সম্পর্ককে সুস্থ ও সুখী রাখা যায়। সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করাই মূল চাবিকাঠি, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনে2।
রিলেশনশিপের জটিলতা কীভাবে সৃষ্টি হয়
রিলেশনশিপ বা সম্পর্কের জটিলতা সাধারণত বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও যোগাযোগজনিত কারণে সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক মানেই বিশ্বাস, ভরসা ও স্বস্তির জায়গা হওয়া উচিত, কিন্তু যখন এই তিনটি উপাদানের কোনো একটি বা একাধিক উপাদান সম্পর্ক থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সম্পর্ক জটিল হয়ে ওঠে1।
রিলেশনশিপের জটিলতা সৃষ্টির প্রধান কারণসমূহ
যোগাযোগের অভাব: সম্পর্কের মধ্যে স্বচ্ছ ও খোলাখুলি যোগাযোগ না থাকলে ভুল বোঝাবুঝি, দূরত্ব ও বিরক্তি সৃষ্টি হয়। আবেগ প্রকাশের অভাব সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে এবং একে অপরের প্রতি বিরক্তি বাড়ায়2।
বিশ্বাস ও সততার অভাব: মিথ্যে বলা, গোপনীয়তা রাখা বা প্রতারণা সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি নষ্ট করে, যা সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরায়1।
অতীতের ঝগড়া ও অভিযোগ টেনে আনা: পুরনো মনোমালিন্য বা অভিযোগ বারবার তুলে আনা সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা ও দূরত্ব বাড়ায়, যা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়5।
অপর্যাপ্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান: সঙ্গীর প্রতি অসম্মান, ক্রমাগত সমালোচনা বা অবজ্ঞা সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ও আস্থা নষ্ট করে23।
অমীমাংসিত মানসিক ট্রমা: অতীতের মানসিক আঘাত বা ট্রমা সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ও সংযুক্তিতে বাধা দেয়, যা সম্পর্কের ভাঙনের কারণ হতে পারে2।
অপূর্ণ যৌন চাহিদা: যৌন সম্পর্কের অসন্তুষ্টি মানসিক ও শারীরিক দূরত্ব সৃষ্টি করে, যা দাম্পত্য জীবনে সমস্যা বাড়ায়2।
টক্সিক আচরণ: যেমন একপক্ষের ডমিনেটিং বা নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ, যা অন্য পক্ষের জন্য মানসিক চাপ ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে17।
অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাশা ও তুলনা: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার অভাব ও অন্যের সাথে অযৌক্তিক তুলনা সম্পর্কের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে3।
নিয়মিত একই সমস্যা পুনরাবৃত্তি: সমস্যা সঠিকভাবে সমাধান না হলে বারবার একই বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়, যা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়5।
সারসংক্ষেপ
রিলেশনশিপের জটিলতা মূলত যোগাযোগের ঘাটতি, বিশ্বাসের অভাব, অতীতের অভিযোগ, সম্মানের অভাব, মানসিক ট্রমা, যৌন অসন্তুষ্টি এবং টক্সিক আচরণের কারণে সৃষ্টি হয়। এসব কারণ সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব, বিরক্তি ও তিক্ততা বাড়িয়ে সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে1235। তাই সম্পর্ককে সুস্থ ও মজবুত রাখতে খোলাখুলি কথা বলা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা রাখা, বিশ্বাস গড়ে তোলা এবং অতীতের সমস্যাগুলো মীমাংসা করা অত্যন্ত জরুরি।
সম্পর্কের জটিলতা কীভাবে সমাধান করা যায়
রিলেশনশিপের জটিলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য মূলত তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: খোলামেলা আলোচনা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বিশ্বাস গড়ে তোলা। প্রথমত, মনে মনে কিছু পুষে না রেখে সরাসরি সঙ্গীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। মন খারাপ থাকলেও, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত যেকোনো সমস্যা নিয়ে দু’জনে খোলাখুলি কথা বলুন, তবে ঝগড়ার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনা বজায় রাখার চেষ্টা করুন3।
দ্বিতীয়ত, একে অপরকে বুঝতে চেষ্টা করা জরুরি। যখন সঙ্গী রাগ করে বা বিরক্ত হয়, তখন তার অনুভূতি ও কারণ বোঝার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে সম্পর্কের মঙ্গলার্থে মানিয়ে চলুন3। এছাড়া, সম্পর্কের বাইরে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে সমাধান চাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে সম্পর্ক দুর্বল হতে পারে3।
তৃতীয়ত, মানসিক দূরত্ব কমাতে ধৈর্য, আন্তরিকতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্কের ভিত মজবুত করতে হবে। খোলামেলা ও সৎ যোগাযোগ বজায় রাখা, একসঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানো, ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ক্ষমা করা এবং সঙ্গীর প্রতি সমানুভূতিশীল হওয়াও অত্যন্ত জরুরি4। এছাড়া মাঝে মাঝে সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস প্রকাশ করা, একসঙ্গে ঘুরতে বের হওয়া এবং প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সিলিং নেওয়াও সম্পর্কের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে4।
আরো কিছু কার্যকর উপায় হলো:
উত্তেজনায় রেগে না যেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজা5
সঙ্গীর প্রয়োজন ও অনুভূতি বুঝে নেওয়া5
ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ভুল স্বীকার ও প্রশংসা করা5
সামনাসামনি কথা বলার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি দূর করা5
এইসব উপায় মেনে চললে সম্পর্কের জটিলতা অনেকাংশে কমে আসে এবং সম্পর্কের ভিত মজবুত হয়। তাই সম্পর্কের সমস্যা এড়াতে ও সমাধান করতে খোলামেলা আলোচনা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া বজায় রাখা সবচেয়ে কার্যকরী পথ2345।
উপসংহার
রিলেশনশিপের জটিলতা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি সম্পর্কেই কখনো না কখনো দেখা দিতে পারে। তবে এসব জটিলতা সম্পর্কের অবনতি নয়, বরং সম্পর্ককে আরও মজবুত করার সুযোগ হিসেবেও দেখা যেতে পারে যদি সঠিক মনোভাব ও উপায় অবলম্বন করা হয়। খোলাখুলি যোগাযোগ, পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা সমাধান সম্ভব। ধৈর্য, সহানুভূতি এবং বোঝাপড়া দিয়ে সম্পর্কের ভিত গড়ে তোলা গেলে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ও সুখকর হয়। তাই সম্পর্কের জটিলতাকে বাধা না ভেবে, তা কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে আমরা আরও গভীর ও অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।
রিলেশনশিপ